দাওয়াহ বিভাগের সেমিনার
সামাজিক উন্নয়নে নারী : ইসলামী দৃষ্টিকোণ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের উদ্যোগে গতকাল বুধবার দাওয়াহ অ্যাকাডেমিক ভবনে (ফিমেল জোন) সামাজিক উন্নয়নে নারী : ইসলামী দৃষ্টিকোণ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করেন, দাওয়াহ বিভাগের খন্ডকালীন প্রভাষিকা জনাবা উম্মে সায়েমা তাযকিয়া। দাওয়াহ বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আমিনুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের মান্যবার প্রো-ভিসি, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মো: আলী আজাদী। বিশেষ অতিথি ছিলেন, শরীয়াহ অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. শাফী উদ্দীন মাদানী।
প্রবন্ধকার জনাবা উম্মে সায়েমা তাযকিয়া খুব চমৎকারভাবে সামাজিক উন্নয়নে নারীদের ভূমিকা সম্পর্কে ইসলামের দিক নির্দেশনা তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, ইসলাম নারীদেরকে পুরুষের সমান গুরুত্ব দিয়েছে। নারী হিসেবে আলাদা চোখে দেখেনি। ইসলাম নারীদেরকে সকল স্তরে ভূমিকা পালনের সুযোগ দিয়েছে। গোটা মানব জাতিকে পেটে ধারণ করে নারীদের অবদান শুরু হয়। এই সময়ে নারীরা সকল সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছে। মানব সমাজ উন্নয়নে পুরুষের সাথে সমান তালে অবদান রাখছে তারা। তিনি নারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নারীদেরকে ইসলামের সুমহান শিক্ষা বিস্তারেও কাজ করতে হবে। সমাজের অর্ধেক জনসংখ্যা নারীদেরকে যদি ধর্মীয় জ্ঞানে আলোকিত করা না যায় তাহলে এ সমাজের ভারসাম্য হারিয়ে যাবে। সমাজে অশ্লীলতাসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ হু হু করে বাড়তে থাকবে। নারীদেরকে ধর্মীয় মূল্যবোধ শেখানোর কাজটি নারীদেরকেই করতে হবে।
প্রধান অতিথির আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো: আলী আজাদী বলেন, মায়েরা এই সমাজকে টিকিয়ে রেখেছে। নারীরা না থাকলে এই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেত। নারীরা পুরুষের চেয়ে বেশী পরিশ্রমী। পুরুষদেরকে কর্মের জন্য নারীরা বেশী প্রেরণা যোগায়। আল্লাহ তায়ালা নারীকে রাণীর আসনে আসীন করেছেন। তিনি কুরআনে উল্লেখিত নারী মৌমাছির কাহিনীকে বৈজ্ঞানিকভাবে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, পুরুষের স্পর্শ ছাড়াই নারী মৌমাছি পুরুষ মৌমাছি জন্ম দিতে পারে। এই কথা আল্লাহ সুরা নাহলে উল্লেখ করেছেন। চৌদ্দশত বছর আগে আল্লাহ তায়ালা নারী মৌমাছির অবদান সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছেন সেই তথ্যকে গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা আজ ডাবল নোবেল ছিনিয়ে নিচ্ছে। নারীরা অবহেলার নয়। নারীরা সমাজে সুন্দর অবদান রাখতে পারেন।
প্রবন্ধের ওপরে আরো আলোচনা করেন, সহযোগী অধ্যাপক আতাউর রহমান নাদভী। তিনি বলেন, ইসলামের আলোকে নারীরা সমাজ উন্নয়নে যে ভূমিকা রাখতে পারে সে কথা সবাইকে জানাতে হবে। ইসলামই নারীকে সমাজের সকল স্তরে নারীদের কাজ করার সুযোগ দিয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শরীয়াহ অনুষদের ডীন, প্রফেসর ড. শাফী উদ্দীন মাদানী বলেন, নারীরা নবীর সাথে সর্ব প্রথম জান্নাতে যাবে। তারা সন্তান পালন করে যে কুরবানী করেছেন তার প্রতিদান হিসেবে আল্লাহ তায়ালা এই পুরস্কার দিবেন।
সেমিনারে আরো আলোচনা করেন দাওয়াহ বিভাগের সাবেক দুই চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. শাকের আলম শওক ও জনাব শাহ জালাল। দাওয়াহ বিভাগের প্রভাষিকা জনাবা জাকিয়া বিনতে আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।